সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

প্রতি মেগাহার্টজে গ্রামীণফোন ১৮ লাখ, বাংলালিংক সাড়ে ১০ লাখ, রবি+এয়ারটেল ১২ লাখ ও টেলিটক ২ লাখ গ্রাহককে সেবা দিবে

ফোরজি সেবা চালু করতে বাংলালিংকের হাতে ১৮০০ ও ২১০০ মেগাহার্টজের নতুন তরঙ্গ মোট ১০.৬ মেগাহার্টজ। আর গ্রামীণফোনের হাতে ১৮০০ ব্র্যান্ডের নতুন তরঙ্গ মাত্র ৫ মেগাহার্টজ।
এছাড়া রবি+এয়ারটেলের হাতে নতুন কোন তরঙ্গ নেই।
কার হাতে কত তরঙ্গ 
এরমধ্যে টেলিটকের হাতে রয়েছে ২৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ । যার মধ্যে  ৯০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড (টুজি) এ ৫.২০ মেগাহার্জ, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড (টুজি) ১০ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড (থ্রিজি) এ ১০ মেগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি।
দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন ৩৭ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করে গ্রাহককে ফোন সেবা দিচ্ছে। এরমধ্যে  ৯০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ৭.৪ মেগাহার্জ, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড  ১৪.৬ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ১৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে জিপি। 
বাংলালিংক ৩০.৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করে । যারমধ্যে  ৯০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ৫ মেগাহার্জ, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড ১৫.৬ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ১০ মেগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে অপারেটরটি।  

রবি ও এয়ারটেলের হাতে আছে মোট ৩৬ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। 
এয়ারটেলের হাতে মোট ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের মধ্যে  ৯০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ৫ মেগাহার্জ, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড ১০ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ। 
আর রবির হাতে রয়েছে ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ  তরঙ্গ। যারমধ্যে  ৯০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ৭.৪ মেগাহার্জ, ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড ৭.৪ মেগাহার্জ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড এ ৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে রবি।
কার্যক্রম বন্ধ থাকা সিটিসেলের অনুকূলে ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও কোম্পানিটি দাবি করে তার সর্বোচ্চ সাড়ে আট মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে। 
এছাড়া বিডব্লিউএ লাইসেন্সের আওতায় কিউবি ২৩০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের ৩৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ও বাংলা লায়ন ২৫০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে ৩৫ মেগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে। অন্য অপারেটর ওলো ৮০০ ব্যান্ডের ২০ মেগাহার্জ, ৩৫০০ ও ২৪০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডেও তরঙ্গ রয়েছে ওলোর কাছেভ এছাড়া এ তিন অপারেটর ২৬০০ ব্যান্ডের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে। 
বর্তমানে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গে গ্রামীণফোন প্রায় ১৮ লাখ, বাংলালিংক প্রতি মেগাহার্টজে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ, রবি ও এয়ারটেল প্রায় ১২ লাখ, ও টেলিটক প্রায় ২ লাখ গ্রাহককে সেব দিতে পারবে। 

মধ্যরাতে ফোন করে সৌরভকে যা বলেছিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট

২০০৪ সালে ভারতের পাকিস্তান সফরের সময় তৎকালীন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ফোন করেছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলিকে। আত্মজীবনী 'আ সেঞ্চুরি ইজ নট এনাফ'-তে একথা লিখেছেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক।
গাঙ্গুলি লিখেছেন, 'সিকিউরিটি অফিসারকে না জানিয়ে মাঝরাতে বন্ধুরা মিলে হোটেল থেকে বের হয়ে যায়। উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের গলমান্ডির বিখ্যাত ফুড স্ট্রিটে কাবাব ও তন্দুরি চিকেন খাওয়া।
তিনি লেখেন, "নিয়ম ভাঙছি জেনেই মুখ ঢেকে, টুপি পরে আমি হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাই। কিন্তু ভয় ছিল যদি কেউ চিনে ফেলে। আর হলও তাই। একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি সৌরভ না? আমি চাপাস্বরে না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাই।"
"ফুড স্ট্রিটের ডিনার টেবিলে আমাকে চিনে ফেলেন জনৈক এক ভারতীয় সাংবাদিক। তিনি জোরে নাম ধরে ডাকতেই শোরগোল পড়ে যায়। চারিদিক থেকে লোক জড়ো হয়ে আমাকে ঘেরাও করে ফেলে। বিল মিটিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে গেলে হোটেলের ম্যানেজার বিল নিতে অস্বীকার করেন। আমার মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, আপনার মত আগ্রাসী মানসিকতার একজনকে চাই যে পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব দেবে।"

"ফুড স্ট্রিট থেকে মাঝরাতে গাড়িতে হোটেলে ফেরার পথে আরও বিপত্তি। আমাদের গাড়ির পিছনে সারি সারি বাইক আর তাদের চিৎকার। শেষ পর্যন্ত নিরাপদে টিম হোটেলে ফিরে আসি। কিন্তু খবরটা পৌঁছে গিয়েছিল প্রেসিডেন্ট মোশাররফের কাছে। তাই তিনি ফোন করে বলেছিলেন, পরেরবার কোথাও টিম হোটেল থেকে বের হলে নিরাপত্তারক্ষীদের জানিয়েই যেন যাওয়া হয়। পাকিস্তানে মাঝরাতে অ্যাডভেঞ্চার যেন না করি।" সূত্র: জি নিউজ

রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

ছবিতে শ্রীদেবী Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi 

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi
শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শ্রীদেবী  Sri davi

শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

এক টুইটে ১.৩ বিলিয়ন ডলার হাওয়া!

কাইলির এক টুইটে ১.৩ বিলিয়ন ডলার হাওয়া!
মেসেজিং অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাট সম্পর্কে রিয়ালিটি টিভি স্টার ও মডেল কাইলি জেনার একটি নেতিবাচক টুইট করার পর বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমটির শেয়ার মূল্য ১.৩ বিলিয়ন ডলার পড়ে গেছে।
সেলিব্রেটি কিম কার্দেশিয়ানের সৎ বোন কাইলি টুইট করেন, ‘এখন আমি ছাড়া আর কেউ কি স্ন্যাপচ্যাট খোলা বন্ধ করে দিয়েছেন? নাকি শুধু আমি একাই বন্ধ করেছি... এটা খুব দুঃখজনক।’

স্ন্যাপচ্যাটের নতুন ডিজাইন চালু করার পর কাইলি তার আড়াই কোটি টুইটার ফলোয়ারকে প্ল্যাটফর্মটি সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্যটি করেন। এরপরই স্ন্যাপচ্যাটের শেয়ারের দাম হু হু করে কমে যায় বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
বৃহস্পতিবার স্ন্যাপচ্যাটের মূল প্রতিষ্ঠান স্ন্যাপ ইনকরপোরেসনের শেয়ারের দাম ৬.১ শতাংশ কমে গেছে।
কাইলি জেনারের টুইটের পর তার ফলোয়াররাও বিভিন্ন মন্তব্যে ও টুইটে স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারে তাদের অনিহার কথা জানান।

এরপর ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকরা জানান, নতুন ডিজাইন চালু করার পর ইউজাররা স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করা কমিয়ে দিয়েছেন।
কাইলির টুইটের পরই মেবিলিন নিউইয়র্ক টুইটারে তাদের ফলোয়ারদের কাছে জানতে চান, স্ন্যাপচ্যাট প্ল্যাটফর্মে থাকা তাদের উচিত হবে কিনা?
প্যারিসের ফ্যাশন ব্র্যান্ড লরিয়েলের প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ‘স্ন্যাপচ্যাটে তাদের পোস্টের ভিউ নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।’

অবশ্য সিটি গ্রুপের বিশ্লেষক মার্ক মে এ সপ্তাহের শুরুতে স্ন্যাপচ্যাটের নতুন ডিজাইন সম্পর্কে নেতিবাচক বিভিন্ন মন্তব্য দেখে সেটির শেয়ারের মূল্য কমে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছিলেন, সেটিই কাইলির টুইটের পর বৃহস্পতিবার বাস্তবে রূপ নেয়।

দর্শক ছবিটি দেখবে ২৯ বছর পর ::ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ একটু বেশিই প্রাপ্তবয়স্ক

ছবিতে অভিনয় করেছেন নাসিরউদ্দিন শাহ, শাবানা আজমী
‘লিবাস’ ছবিটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। কিন্তু ওই সময় ছবিটির ছাড়পত্র দেয়নি ভারতের চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। ‘লিবাস’ ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছবিটি একটু বেশিই প্রাপ্তবয়স্ক। যাকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতেও ছাড়পত্র দেওয়া যায় না।
এক শহুরে দম্পতি। তাদের নিয়ে ‘লিবাস’ ছবির চিত্রনাট্য। ছবিতে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি আছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েন। চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষের মতে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনের পাশাপাশি একটু বেশি মাত্রায় খোলামেলা দৃশ্য দেখানো হয়েছে। তা সমাজের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। যার ছাড়পত্র দেওয়া ভারতের চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। ছবির পরিচালক গুলজার। চিত্রনাট্য তিনিই লিখেছেন। ছবিতে অভিনয় করেছেন নাসিরউদ্দিন শাহ, শাবানা আজমী, রাজ বাব্বর, উৎপল দত্ত, সুষমা শেঠ, আন্নু কাপুরসহ অনেকে। ছবির গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন রাহুল দেব বর্মণ। ছবিটি পরিবেশনার দায়িত্বে রয়েছে জি স্টুডিওস।‘লিবাস’ ছবির প্রযোজক বিকাশ মোহন। তাঁর দুই ছেলে অমল বিকাশ মোহন আর অনশুল বিকাশ মোহনের উদ্যোগেই নাকি এবার মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। অমল বিকাশ মোহন পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘ছবিটি ওই সময় নানা কারণে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। ছবিটি নিয়ে আমার বাবার স্বপ্ন ছিল। এবার আমরা সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে পারছি। এ বছরের মাঝামাঝি ছবিটি রিলিজ করা হবে।’ ভারতে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক ও কবি গুলজারের জন্মদিন ১৮ আগস্ট। এ বছর গুলজারকে তাঁর ৮৩তম জন্মদিনে ‘লিবাস’ ছবিটি উৎসর্গ করা হবে।

শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

১/১১ সরকার উৎখাত করতে চেয়েছিল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একটি অংশ

শুধু নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে  দল বেশি দিন টিকবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও উন্নতির দিকে যাবে। শুধু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সুবিধা দেওয়া হলে তা দলের জন্য ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।  উন্নয়ন হতে হবে সমষ্টিগত। দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে, জাতি আগাচ্ছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে  জাহাঙ্গীর আলমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এসব কথা বলেন। সৈয়দ আশরাফ বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালো থাকলে আমরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ভালো থাকব। দেশ রসাতলে গেলে আমরাও রসাতলে যাব। যারা আওয়ামী লীগ করেন, যারা রাজনীতি করেন, যারা রাজনীতি করেন না, যারা সাধারণ মানুষ— সবার ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। সরকার সবার জন্য সমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার। কেবল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভাগ্যের পরিবর্তন করলে এই দল বেশি দিন টিকবে না।

জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। সব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। মূল কথা হলো, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হলে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভাগ্যেরও পরিবর্তন হবে। সৈয়দ আশরাফ স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ সময় তিনি যুক্তরাজ্যে প্রবাস জীবন কাটান। ১৯৭৬ সালে তার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি পাসপোর্ট ফিরে পান। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিন হন। তিনি ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২০০৯ সালে এবং ২০১২ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের সরকারে প্রতিমন্ত্রী, ২০০৯ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং বর্তমানে জনপ্রশাসনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। যুক্তরাজ্যে থাকাকালে তিনি সক্রিয়ভাবে লেবার পার্টির রাজনীতি করেছেন।
টানা দুবারের সাধারণ সম্পাদক এবং দল প্রথমবারের মতো টানা দুবার ক্ষমতায় গেল— এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দল এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ। নেতৃত্বে কোনো সংকট নেই। দলের একক নেতা, যিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নেতৃত্বে দল সার্বিকভাবে ঐক্যবদ্ধ। দলে এখন রাজনীতি আছে। দলের উদ্দেশ্য, আদর্শ ও লক্ষ্য না থাকলে সে দল চলতে পারে না। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা ও মহানগরের কাউন্সিল উৎসবমুখর পরিবেশে সংগঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন আরও শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তার মতে, দলীয় ঐক্য, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, ইতিবাচক রাজনীতি এবং জাতির কাছে সুদৃঢ় অঙ্গীকার— এসব মানুষের কাছে সাংঘাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ফলে টানা দুবার দল ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর সরকার ও দলের মধ্যে ফারাক তৈরি হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন, এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সৈয়দ আশরাফ বলেন, দল ও সরকারের মধ্যে কোনো ফারাক বা সমন্বয়হীনতা আছে বলে আমার মনে হয় না। আওয়ামী লীগ একটা শক্তিশালী দল। তার নিজস্ব কার্যক্রম দলগতভাবে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা বন্ধ হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে কেবল কেবিনেটে বসে আছে তা নয়, মাঠে-ময়দানে দলীয় কার্যক্রম চলছে। এর কোনো রকম বিঘ্ন ঘটেনি। এ ছাড়া  দলে কোনো বিভেদ নেই, দলাদলি নেই। এই ভাইয়ের গ্রুপ, সেই ভাইয়ের গ্রুপ নেই। সে কারণেই আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হচ্ছে। বলা যায়, গত ১০ বছর ধরে আওয়ামী লীগে কোনো গ্রুপিং নেই। বিএনপির নির্বাচন বর্জনে আওয়ামী লীগের জয়লাভে সহায়ক হয়েছিল কিনা— এমন প্রশ্নে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছিল যে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। তাই তারা নির্বাচন বর্জন করেছে। তবে বিএনপি গত নির্বাচনে না গিয়ে ভুল করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করলে তারা লাভবান হতে পারবে না, ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্বাচন বর্জন করা মানে নিজের পায়ে কুড়াল মারার শামিল। আওয়ামী লীগের ইতিহাসে খুব কমই নির্বাচন বর্জনের ঘটনা আছে। জেনারেল আইয়ুব, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদের আমলেও আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করেনি। বঙ্গবন্ধু বলতেন, নির্বাচনে যাওয়া কেবল জয়লাভের জন্য নয়, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে বার্তা দেওয়া যায়। আপনি আগে একটি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে ছিলেন, এখন একটি প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। সরকার ও দল এ দুইয়ের সমীকরণ কীভাবে মেলাবেন— এমন প্রশ্নে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে মন্ত্রিসভা সমষ্টিগতভাবে কাজ করে। যেমন আমি জনপ্রশাসনমন্ত্রী, কিন্তু সিদ্ধান্ত হয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে। একটি টিম রাষ্ট্র পরিচালনা করে। আমাদের টিমের লিডার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানে কোনো ব্যক্তি নন। রাষ্ট্র পরিচালনা একটি টিমওয়ার্ক। আগামী নির্বাচন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের নির্বাচন হবে বলে অনেকে মনে করেন। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দলকে কীভাবে ঢেলে সাজানো দরকার জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দুবারের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা দলের সব শাখার সম্মেলন শেষ করে এরই মধ্যে দল গুছিয়ে এনেছি। আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দলগতভাবে আমরা প্রস্তুত। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে এবং তার নেতৃত্বে বিপুল ভোটে দল জয়লাভ করবে। দল আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসবে। সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক দল যেমন কংগ্রেস পার্টি ভারতের স্বাধীনতার পর টানা ৩০ বছর ক্ষমতায় ছিল। টানা দুবারের বেশি কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না তা সংসদীয় গণতন্ত্রে নেই। এখানে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়। জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী টানা কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থেচার টানা চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কনজারভেটিভ পার্টি এই মুহূর্তে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে। লেবার পার্টির যে অবস্থা তাতে মনে হয় তারা আবারও ক্ষমতায় আসবে। সংসদীয় গণতন্ত্রে কোনো দলের একাধিকবার ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই। ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে বর্তমান যে নীতিতে এগোনো হচ্ছে, সেটাকে কীভাবে দেখেন— জানতে চাইলে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের সঙ্গে এখন বাংলাদেশের সম্পর্ক অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। আমরা একদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছি, একইভাবে চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক রাখছি আবার রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পারি। এটাই বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক দর্শন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। যে কারণে সব রাষ্ট্রের সঙ্গেই আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। কারও সঙ্গে বৈরিতা নেই।
এক-এগারোতে দলের কঠিন দুঃসময়ে আপনি দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই পথ-পরিক্রমায় আজকের অবস্থানকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন জানতে চাইলে সৈয়দ আশরাফ বলেন, এক-এগারোর একটা সময়ে বিএনপি এবং আমাদের দলের একটি অংশ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উত্খাত পরিকল্পনা নিয়েছিল। তখন আমার কথা ছিল, আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, নির্বাচন আদায় করা। আমরা যদি নির্বাচন আদায় করতে না পারতাম, তাহলে সামরিক শাসন দীর্ঘায়িত হতো। আইয়ুব, জিয়া, এরশাদের সামরিক শাসন দেশে দীর্ঘ সময় ছিল। সে কারণেই তখন আমাদের অনেক কৌশল করতে হয়েছে। তখন আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুটি, প্রথমত দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে কারামুক্ত করা, দ্বিতীয়ত নির্বাচন আদায় করা। আমরা দুটোতেই সফল হয়েছি। দলীয় সভানেত্রী কারামুক্ত হয়েছেন এবং তার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করে আমরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছি। তখন যদি আমরা ভুল করতাম, বিএনপির সঙ্গে মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার উত্খাতে মনোযোগী হতাম তাহলে এক-এগারোর সরকারের বিদায় হতো না, নির্বাচনও হতো না, আমরা ক্ষমতায়ও যেতে পারতাম না। সৈয়দ আশরাফ বলেন, এক-এগারোর সময় জিল্লুর রহমান (তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি) সাহেবের একটা ভূমিকা ছিল। তিনি ইতিবাচক ছিলেন। তিনিও চেয়েছিলেন, একটা নির্বাচন হোক। আমাদের ধারণা ছিল, নির্বাচন আদায় করতে পারলে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করবে এবং শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে। জিল্লুর রহমান সাহেব খুব শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। উত্তেজিত হতেন না। তিনি বলেন, বিএনপি সে সময় নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে। কারণ তারা জানত যে, নির্বাচনে তারা জয়লাভ করতে পারবে না। সে বিপর্যয় কিন্তু বিএনপি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বিএনপি যে গত নির্বাচন বর্জন করল এটাও তাদের রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়বে। একবার ট্রেন লাইনচুত্য হলে তা আবার লাইনে নিয়ে আসা অনেক কঠিন।
সূত্র ঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন 

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

মেলানিয়ার বাবা-মা কোন প্রক্রিয়ায় গ্রিনকার্ড পেলো তার কারণ খুঁজছে মার্কিন গণমাধ্যম


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘চেইন মাইগ্রেশনের’ তীব্র বিরোধী, কিন্তু তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প একজন অভিবাসী এবং মেলানিয়ার বাবা-মা এখন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারী বাসিন্দা। কিন্তু তারা কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের ছাড়পত্র পেয়েছেন, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ও স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং তারা নাগরিকত্ব পাওয়ার কাছাকাছি রয়েছেন বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগতদের বরাতে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট, নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিএনএন।
যদিও মেলানিয়ার বাবা-মা কীভাবে এবং কখন তাদের ‘গ্রিন কার্ড’ পেয়েছেন তা জানাতে অস্বীকার করেছেন তাদের আইনজীবী, জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেলানিয়ার বাবা ভিক্টর কাভস ও মা আমালিজা কাভস খুব সম্ভবত পারিবারিক পুনরেকত্রীকরণ প্রক্রিয়াতেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের ছাড়পত্র পেয়েছেন, যে প্রক্রিয়াকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উপহাস করে ‘চেইন মাইগ্রেশন’ অভিহিত করে আসছেন। তিনি এ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। ফার্স্ট লেডি ও তার পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করা নিউ ইয়র্কভিত্তিক আইনজীবী মাইকেল ওয়াইল্ডসের ভাষ্য, স্লোভেনিয়ার সাবেক বাসিন্দা কাভসরা গ্রিন কার্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তিনি বলেছেন, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, মেলানিয়া ট্রাম্পের বাবা-মা বৈধভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন। পরিবারটি প্রশাসনের অংশ না হওয়ায় তারা তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর অনুরোধ করেছেন, তাই এই বিষয়ে আমি আর কোনো মন্তব্য করবো না।
কাভসদের অভিবাসন তথ্য সম্পর্কে জ্ঞাত এক ব্যক্তির ভাষ্য অনুযায়ী, কাভসরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় আছেন। নাগরিকত্বের আবেদন করার আগে স্থায়ী বাসিন্দাদের সাধারণত গ্রিন কার্ড নিয়েই পাঁচ বছর থাকতে হয়। কাভসরা কবে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তা স্পষ্ট না হলেও ২০০৭ সালের শেষ দিকে সরকারি নথিতে ভিক্টর কাভসের ঠিকানা ছিল ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের পাম বিচের বিলাসবহুল মার-আ-লাগো অবকাশ কেন্দ্র।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী কট্টর অবস্থান নিলে তার শ্বশুর-শাশুড়ির যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে। গত মাসে প্রেসিডেন্ট দশককাল ধরে চলে আসা পারিবারিক পুনরেকত্রীকরণ নীতিতে বাবা-মা ও সহোদরদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে থাকার পথ বন্ধ করার প্রস্তাব করলে বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্প এ পারিবারিক পুনরেকত্রীকরণ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরব। গত মাসে স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের ভাষণে প্রেসিডেন্ট এ ‘চেইন মাইগ্রেশন’ পদ্ধতিকে আমেরিকানদের জীবনধারণ ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে অভিবাসী হওয়া ব্যক্তিরা কেবল তাদের স্বামী/স্ত্রী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদেরই যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার অনুমতি পেতে পারেন বলেও মত ট্রাম্পের। ট্রাম্প সমালোচনা করলেও তার শ্বশুর-শাশুড়ি পারিবারিক পুনরেকত্রীকরণ পদ্ধতিতেই যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন বলে ধারণা অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের।
নিউ ইয়র্ক ইমিগ্রেশন ল ফার্মের অংশীদার ম্যাথিউ কোলকেন জানান, দুই উপায়ে ট্রাম্পের শ্বশুর- শাশুড়ি গ্রিন কার্ড পেতে পারেন। একটি হচ্ছে- তাদের মেয়ে মেলানি কিংবা চাকরিদাতা কারও জামিনের মাধ্যমে। গ্রিন কার্ড পাওয়ার দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে- এমন কোনো কাজের জন্য অন্য দেশের নাগরিকদের নিয়ে আসা, যা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক পারেন না। কাভসরা দুজনই যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগেই অবসর নিয়েছিলেন বলে খবর মার্কিন গণমাধ্যমের। ৭৩ বছর বয়সী ভিক্টর কাভস স্লোভেনিয়ায় শোফার ও গাড়ি বিক্রেতার কাজ করতেন, ৭১ বছরের আমালিজা ছিলেন টেক্সটাইল কারখানার প্যাটার্ন মেকার।অভিবাসীদের বাবা-মারও যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে থাকার উপায় থাকায় ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার জামিনেই ভিক্টর ও আমালিজা গ্রিন কার্ড পেয়েছেন বলে ধারণা মার্কিন ইমিগ্রেশন লইয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডেভিড লিডপোল্ডের।
বিদেশিরা চাইলে শরণার্থী হিসেবে কিংবা অন্যান্য মানবিক কর্মসূচির মাধ্যমেও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ পেতে পারেন বলে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বরাত দিয়ে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। হোয়াইট হাউস এবং ফার্স্ট লেডির মুখপাত্র কাভসদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কাভসদের যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসের ব্যাপারে খোঁজখবরের মধ্যেই মার্কিন গণমাধ্যম ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার ইতিহাসেও আলো ফেলছে।
মেলানিয়ার আইনজীবী ওয়াইল্ডস জানান, ১৯৯৬ সালে ফার্স্ট লেডি স্লোভেনিয়া থেকে প্রথম মডেলিংয়ের কাজে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। প্রথম দফায় তিনি দর্শনার্থী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, পরে পান কাজ করার অনুমতি। ২০০০ সালে  ট্রাম্প মডেলিংয়ে ‘অসাধারণ দক্ষতা’ দেখানো মেলানিয়ার গ্রিন কার্ডের জামিনদার হন।যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার অনুমতি পাওয়ার আগে মেলানিয়াকে ১৯৯৬ সালেই ট্রাম্প ১০টি মডেলিং কাজের জন্য অর্থ দিয়েছিলেন বলে গত বছর এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল। যদিও কোন ‘বিশেষ দক্ষতা’র কারণে মেলানিয়া গ্রিন কার্ডের যোগ্য বিবেচিত হয়েছিলেন তা জানা যায়নি।
নোবেল পুরষ্কার জয়ীদের মতো বিশেষ ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিরাই সাধারণত এ বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে থাকার অনুমতি পান। ট্রাম্পের সঙ্গে পরিচয়ের কয়েক বছর পর ২০০১ সালে গ্রিন কার্ড পেয়েছিলেন মেলানিয়া, এরপর ২০০৬ সালে পান মার্কিন নাগরিকত্ব। মেলানিয়া যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার পর তার বাবা-মাও স্লোভেনিয়া ছাড়েন, যদিও ২০০৭ এর আগেই তারা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নথিতে ওই বছরই ভিক্টর কাভসের ঠিকানা হিসেবে মার-আ-লগোর নাম আসে, তার নামে ফ্লোরিডাভিত্তিক মার্সিডিজ-বেঞ্জের একটি গাড়িও ওই সময়ই নিবন্ধিত হয়। কেবল বাবা-মাই নন, মেলানিয়ার বড় বোন ইনেসও পরে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। এখন তিনি নিউ ইয়র্কের পার্ক অ্যাভিনিউতে ট্রাম্পের মালিকানাধীন অ্যাপার্টমেন্টে থাকছেন।

ছেলে ব্যারনকে নিয়ে গত গ্রীষ্মে মেলানিয়া হোয়াইট হাউসে আসার পর থেকে তারা বাবা-মাকেও ওয়াশিংটনে নিয়মিত দেখা যেতে থাকে বলে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কয়েক বছর আগে ট্রাম্পের শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের গ্রিন কার্ডের আবেদন কী অবস্থায় আছে, তা দেখতে সিনেটর চার্লস ই শুমারের দপ্তরে যোগাযোগ করেছিল বলেও এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানিয়েছেন। অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য কাজ করা ডেমোক্রেট নেতা শুমারের মতো অনেকের কাছেই এ ধরনের অনুরোধ নিয়মিত আসে।
ট্রাম্পের শ্বশুর-শাশুড়ির অনুরোধ বিষয়ে সিনেটে সংখ্যালঘু দলের নেতা শুমারের দপ্তর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। গত ৩০ জানুয়ারি স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসন বিষয়ে তার চার-দফা পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ‘চেইন মাইগ্রেশন’ বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে অভিবাসী নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্প জানান, 'এখনকার ভঙ্গুর প্রক্রিয়ায় একজন অভিবাসীই কার্যত তার অসংখ্য আত্মীয়কে নিয়ে আসতে পারে। আমাদের পরিকল্পনায়, আমরা কেবল অভিবাসীর স্ত্রী/স্বামী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানকে জামিনের প্রস্তাব করছি। গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্কার কেবল আমাদের অর্থনীতির জন্য নয়, প্রয়োজন আমাদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের জন্যও।'
গত ৬ ফেব্রুয়ারি টুইটারে ফের অবস্থান স্পষ্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি জানান, 'আমাদের প্রয়োজন, ২১ শতকের মেধার ভিত্তিতে অভিবাসন প্রক্রিয়া। চেইন মাইগ্রেশন এবং ভিসা লটারি হল বাতিল প্রক্রিয়া, যেগুলো আমাদের অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে'।ডেমোক্রেটদের পাশাপাশি অনেক রিপাবলিকানও ট্রাম্পের এ অবস্থানের বিরোধিতা করছেন। গত সপ্তাহে রিপাবলিকান সাংসদ চার্লস ই গ্রাসলির একটি প্রস্তাব মার্কিন সিনেটে খারিজ হয়ে গেছে; হোয়াইট হাউসের সমর্থনপুষ্ট ওই প্রস্তাবে অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বুক ফাটা আর্তনাদ ট্রাম্পের: আমি কখনো একথা ভুলতে পারব না যে, ওবামা ১৭০ কোটি ডলার নগদ অর্থ ইরানের হাতে তুলে দিয়েছেন

পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের কিছু পাওনা পরিশোধ করায় তীব্র কষ্ট পেয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এক টুইটার বার্তায় বুকের ভেতরের সে কষ্টের কথা প্রকাশ করে দিয়েছেন। মার্কিন ধনকুবের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রোববার তার বার্তায় লিখেছেন, “আমি কখনো একথা ভুলতে পারব না যে, ওবামা ১৭০ কোটি ডলার নগদ অর্থ ইরানের হাতে তুলে দিয়েছেন। অথচ কংগ্রেস, এফবিআই কিংবা বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে এর কোনো প্রতিবাদ করা হয়নি।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৭ সালের গোড়ার দিকে ক্ষমতা গ্রহণ করেই তার দেশসহ সাত বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন।কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার সহযোগিতায় তার নির্বাচনে জয়লাভ নিয়ে আমেরিকায় তোলপাড় শুরু হওয়ায় জনমতকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে ইরান বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।ট্রাম্প ইরানকে যে ১৭০ কোটি ডলার নগদ অর্থ দেয়ার কষ্ট ভুলতে পারছেন না সে অর্থ ছিল ইরানের পাওনা যা কয়েক দশক ধরে আমেরিকার কাছে আটকা ছিল।
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ওয়াশিংটন নানা অজুহাতে এ অর্থ আটকে রাখলেও ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় তা ফেরত দিতে সম্মত হয় তৎকালীন ওবামা প্রশাসন। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে পরমাণু সমঝোতার বাস্তবায়ন শুরু হলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সে অর্থ তেহরান ফেরত পায়।

সাবের চৌধুরী আওয়ামী লীগের আর্দশের লোক না :: বোমা ফাটালেন ওবায়দুল কাদের


ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের কৌশলগত অবস্থান বোঝাতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও আসন জয়ের জন্যই ১৯৯৬ সালে সাবের হোসেন চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছিল তার দল।একই কারণে তৎকালীন যুবদল নেতা হাজী সেলিমকেও সে সময় নৌকার প্রার্থী করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার ঢাকায় একদল ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে আলোচনায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি তো মাঝে মাঝে বলি, আমাদের ঢাকা সিটিতে আমাদের দীর্ঘদিনের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা মোজাফফর হোসেন পল্টুকে বাদ দিয়ে নবাগত সাবের হোসেন চৌধুরীকে ’৯৬-এ মনোনয়ন দিয়েছিলাম। তখনও অনেক প্রশ্ন ছিল, তিনি আদর্শের মধ্যে পড়ছিলেন না।”
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আত্মীয় ব্যবসায়ী সাবের চৌধুরী ১৯৯৬ সালের ওই নির্বাচনে ঢাকা-৬ আসনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনার সরকারের উপমন্ত্রী হয়েছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিও ছিলেন তিনি।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কাছে হেরে যান সাবের, ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগও। এরপর রাজনীতিতে আরও উন্নতি হয় সাবের চৌধুরীর, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিব হয়েছিলেন তিনি।
তবে ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেখ হাসিনা বন্দি হওয়ার পর দলীয় প্রধানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তার। এখন আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও দলটির সাংসদ তিনি। ২০১৫ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্ট সদস্যদের সংগঠন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি হন তিনি।
সাবের চৌধুরীর মতো হাজী সেলিমকেও একই কারণে মনোনয়ন দেওয়ার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “দেখুন, ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত-ত্যাগী নেতা। তাকে বাদ দিয়ে আমরা হাজী সেলিমকে মনোনয়ন দিয়েছিলাম।“সেই ইলেকশনের এক সিটের জন্য আ স ম রব, তারপর জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের জোট করতে হয়েছিল।”আওয়ামী লীগকে সন্দেহের চোখে দেখার আগে এ বিষয়গুলো ভেবে দেখার অনুরোধ করেন তিনি।কাদের বলেন, “আমরা আমাদের শিকড় থেকে সরে যাইনি। এগুলো না করলে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারতাম না।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ২১ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে আওয়ামী লীগকে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই, একুশ বছর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার পর থেকে পাকিস্তানি ধারায় বাংলাদেশটাকে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা শুরু হয়েছিল। একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসে রাতারাতি সব আদর্শকে ধারণ করা সম্ভব হয় না।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে তাদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীও আন্দোলনে ছিল।ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেটা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছে। পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটা কাগজে আমি দেখেছি, তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন আছে জিঙ্গাসা আছে। কিন্তু, দেখুন কিছু করতে হলে আমাদের তো ক্ষমতায় আসতে হবে।
“এন্টি ফোবিয়া এত তীব্র ছিল… এসবের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা কিন্তু পিছপা হননি। আমরা কৌশলগত জোট করেছি বলেই ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।”

আওয়ামী লীগের বিকল্পরা পাকিস্তানের বন্ধু :: ভারতের কাছে ওবায়দুল কাদেরের করুণ আর্তি

ক্ষমতাসীন দলের নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা আওয়ামী লীগের বিকল্প হতে পারে, তারা ‘পাকিস্তানের বন্ধু’, এ বিষয়টি তিনি ভারত সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চান।“আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কটা আরও শক্তিশালী করতে চাই, আরও জোড়দার করতে চাই।”নির্বাচনের বছরখানেক বাকি থাকতে বুধবার বিকালে ঢাকার একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ-ইনডিয়া মিডিয়া ডায়ালগ’ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্য আসে।

তিনি বলেন, “আমি ভারতীয় সাংবাদিক বন্ধুদের বলতে চাই, এ কথাটা আপনাদের মনে রাখতে হবে… বাংলাদেশে আমাদের বিকল্প যারা তারা পাকিস্তানের বন্ধু, যারা আপনাদের সেভেন সিস্টার্সের যাবতীয় গ্যাঞ্জামের হোতা, যারা পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে কাজ করে। একই চক্রান্তের জালে তারা আবদ্ধ।”

ভারত সরকারের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী কাদের বলেন, “আরেকটা বিষয়ে অনুরোধ করব, প্লিজ আমাদের একটু সাহায্য করুন। পর পর তিনটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা ফেইস করেছি।“আমাদের হাওরের বন্যা, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা, রোহিঙ্গা ইস্যু… রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এখন এগারো লাখ অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ কীভাবে ভার সইবে? একাত্তরের ক্রাইসিসে আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, এবারও আপনারা পাশে দাঁড়ান।কাদের বলেন, “আজকেও আমরা ক্রাইসিসের মধ্যে আছি। এক্ষেত্রে ভারতের সাহায্য খুবই প্রয়োজন। আপনাদের সাথে মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে সেটা দেখে না কেউ।

“আমাদের সি বিচে এখন পর্যটকরা যাচ্ছে না, আমাদের পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছি। কাজেই ভারত সরকার যেন মিয়ানমারের ওপর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিতে চাপ দেয়, প্রেশার দেয়।”তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যার কথাও ভারতীয় গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন (২০১৫ সালের জুনে) ঢাকায় এলেন, তখন তিনি আমাদের বলেছিলেন, তিনি এবং শেখ হাসিনা দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থাতেই তিস্তা চুক্তি হবে। এ রকম আশ্বাসে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম, এখনো আশায় আছি।
সামনে নির্বাচন, মাত্র সাত-আট মাস আছে নির্বাচনের, আমাদের জনগণের কাছে জবাব দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন… এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাইছি।”

এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, তিস্তায় যে পানি আছে, তার যৌক্তিক হিস্যা বাংলাদেশকে দিতে হবে।“দেখুন… কিছু হলেও আমাদের দিন। আমাদের বাঁচতে দিন। উত্তর জনপদ মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। তিস্তার দুই পারে হাহাকার, এই হাহাকার বড়ই কষ্টদায়ক।”

ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার যাতে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে ‘সম্মানজনক, যুক্তিসঙ্গত, বাস্তবসম্মত’ একটি সমাধানে আসে, সে বিষয়টি ভারত সরকারের কাছে তুলে ধরতে পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। “আপনারা তাকে বলবেন, তিস্তার পানি বণ্টনের সহযোগিতায় এগিয়ে এলে বাংলাদেশের জনগণ শ্রদ্ধার সাথে তাকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) স্মরণ করবে।”

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। এরপর দুই দেশের মধ্যে প্রায় প্রতিটি উচ্চ পর্যায়ের সফরে ওই চুক্তি নিয়ে কথা হলেও এখন পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি।

ওষুধ ছাড়াই এক মিনিটে ঘুমিয়ে পড়ুন :: তত্ত্ব 4-7-8

কর্মব্যস্ত দিনের শেষে বিছানায় গড়িয়ে লম্বা ঘুম। সাত-আট ঘণ্টা ঘুমের পর ফের চাঙ্গা হয়ে নতুন করে কাজে লেগে পড়া। এ স্বপ্ন আমরা অনেকেই দেখি। কিন্তু বাস্তবে আর তেমনটা হয়ে ওঠে কোথায়? বিছানায় শুয়েও ঘুম আসতে চায় না অনেকেরই। আর তার উপর স্মার্টফোনের নেশায় আসক্ত হলে তো আর কথাই নেই। ঘরের আলো নিভিয়েই দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোনের দিকে চেয়ে থেকে নষ্ট হয় আরও খানিকটা সময়। রাতে আবার অনেকবার ঘুমও ভেঙে যায়। তাহলে উপায়? ভাল ঘুমের চাবিকাঠি আসলে কী? এ ভাবনা ভেবে আবার রাতের ঘুম ওড়াবেন না। বিছানায় শোয়ার মিনিট খানেকের মধ্যেই ঘুম আসার একটি অত্যন্ত সহজ উপায় আছে।

একটি বিশেষ শ্বাসক্রিয়ার অভ্যাস করে ফেলতে পারলেই তাড়াতাড়ি ঘুম এসে যাবে। যে অভ্যাসের পোশাকি ভাষা ‘৪-৭-৮’। যাদের রাতে ঘুম আসে না তাদের জন্য এই সহজ উপায়ের পথ বাতলেছেন লেখক ডক্টর অ্যান্ড্রু ওয়েইল। ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘুমের দেশে পৌঁছে যেতে কীভাবে নিঃশ্বাস নিতে হবে? লেখক জানাচ্ছেন, প্রথমে নাক দিয়ে চার সেকেন্ড শ্বাস নিন। তারপর সাত সেকেন্ড শ্বাসক্রিয়া আটকে রাখুন। আর আগামী ৮ সেকেন্ড মুখ দিয়ে আস্তে করে নিঃশ্বাস ত্যাগ করুন। যতক্ষণ পর্যন্ত ঘুম না আসে এভাবেই শ্বাসক্রিয়া চালান। বেশিক্ষণ না, মিনিট খানেকের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়বেন। লেখকের মতে, এর ফলে হৃদপিণ্ডে কেমিক্যালের প্রভাব কমে যায়। আর তাতেই চটজলটি ঘুম এসে যায়।

আরেক লেখক আলিনা গোঞ্জালেজ বলছেন, 'এমন অদ্ভুত অভ্যাসে যে তাড়াতাড়ি ঘুম আসে, বিষয়টা প্রথমে আমার কিছুতেই বিশ্বাস হয়নি। একপ্রকার পরীক্ষা করতেই ট্রিকটা করে দেখি। কিন্তু পরের দিন সকালে উঠে মনেই করতে পারলাম না শেষ আট সেকেন্ডের পর আর জেগেছিলাম কিনা। এতটাই গভীর ঘুম এসে গিয়েছিল। এই টেকনিকটা যেন ড্রাগের মতো কাজ করল। আসলে এভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিলে দেহ-মন দুইই শান্ত হয়ে যায়। আর উত্তেজনা থেকে আপনাকে অনেকখানি দূরে নিয়ে যায়।'

প্রশ্ন ফাঁসের মূলে টপটেন :: পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করাও সুফল মেলেনি

অনলাইন: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত মূল চক্রের সন্ধান করতে গিয়ে 'টপটেন' নামে একটি বিশেষ গ্রুপের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এই গ্রুপ থেকেই কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কাছে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন পৌঁছাত। গোয়েন্দারা মনে করছেন- টপটেন গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করা গেলে প্রশ্ন ফাঁসের মূল উৎস শনাক্ত করা যাবে। এদিকে প্রশ্ন ফাঁসে সরাসরি জড়িত থাকতে পারে, এমন সন্দেহভাজন ছয়জনের একটি গ্রুপকে এরই মধ্যে শনাক্ত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের ধরতেও গোয়েন্দা জাল পাতা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই ওই ছয়জনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে চান না গোয়েন্দারা। পুলিশ-র‌্যাবের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সমকালকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

ফেসবুক, ইমো, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টপটেন নামের গ্রুপ খুলে প্রশ্নপত্র বিক্রি করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। জড়িতদের গ্রেফতারে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ- কিছুদিন ধরে এমন অভিযোগের পর মূল অপরাধীদের গ্রেফতারে মনোযোগী হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও মনে করছেন- আইসিটি বিভাগ, মাঠ প্রশাসন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সময় মতো তৎপর হলে প্রশ্ন ফাঁস অনেক আগেই ভালোভাবে সামাল দেওয়া যেত। পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মনে করেন, এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের গ্রেফতার করা না গেলে দুই ধরনের ঝুঁকি থাকবে। এক- আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার সময়ও একই চক্র একইভাবে প্রশ্ন ফাঁস করে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারে। দুই- প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতাদের ধরা না গেলে কী প্রক্রিয়ায় কীভাবে কার মাধ্যমে কারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করছেন তা অজানাই থাকবে। তবে এরই

মধ্যে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন, দুইভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। একটি চক্র পরীক্ষার অনেক আগেই প্রশ্ন ফাঁস করে দুই থেকে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে তা ছড়িয়ে দেয়। আবার কয়েকটি চক্র পরীক্ষার দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগেই প্রশ্ন ফাঁস করে। তারা মাত্র ২০০-৩০০ টাকায় প্রশ্ন পৌঁছে দিয়ে বিকাশে অর্থ নেয়।চলতি বছর এসএসসির প্রশ্ন ফাঁস অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। তাই বাধ্য হয়ে সরকার পাবলিক পরীক্ষার বর্তমান পদ্ধতি বদলে ফেলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীতে ছাপানো প্রশ্নে পরীক্ষা না নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষার জন্য তৈরি করা হবে প্রশ্নব্যাংক। তুলে দেওয়া হচ্ছে এমসিকিউ পদ্ধতি।

সোমবার র‌্যাব রাজধানীর উত্তরখান ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ক্যামব্রিজ হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তানভীর হোসেনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। অন্যরা হলো- একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সজীব মিয়া, উত্তরখানের সৃজনশীল কোচিংয়ের শিক্ষক এনামুল হক ও মো. ইব্রাহীম এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের ছাত্র হাসানুর রহমান। অনলাইনে হাসানুর 'রকি ভাই' নামে পরিচিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচজনই স্বীকার করেছেন, টপটেন নামে একটি গ্রুপ থেকেই তারা টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন পেতেন। বিকাশের মাধ্যমে টপটেন গ্রুপ পরিচালনাকারীদের অর্থ দেওয়া হতো। প্রতিটি প্রশ্ন সেটের জন্য পরিশোধ করতে হতো দুই থেকে তিন হাজার টাকা।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সমকালকে বলেন, যাদের কাছ থেকে গ্রেফতার পাঁচজন প্রশ্ন পেতেন তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। প্রশ্ন ফাঁসের মূল রুট শনাক্ত করতে গোয়েন্দারা কাজ করছেন।র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, টপটেন গ্রুপ থেকেই ক্যামব্রিজ হাইস্কুলের শিক্ষকসহ অন্যরা প্রশ্ন পেতেন। এই গ্রুপের সঙ্গে জড়িতদের ধরা গেলে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। শিক্ষকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতারের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত র‌্যাব করতে পারে বলেও জানান তিনি।

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে তাদের মধ্যে কেউ প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতা নন। গ্রেফতার অধিকাংশই শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক। অভিযোগ রয়েছে, প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতাদের গ্রেফতারে এখনও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা নেই। অতীতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের ধরতে তৎপর হলেও এবার তা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে বিভিন্ন সময় চ্যালেঞ্জ নিয়েই মাঠে দেখা যেত গোয়েন্দাদের। তবে এবার গোয়েন্দাদের মধ্যে শুরু থেকে শৈথিল্য দেখা যায়।

প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হলেও কোনো সুফল মেলেনি।এ বিষয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতাদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অল্প সময়ের মধ্যে এর ফলও দেখা যাবে। পুলিশ এও মনে করছে, শুধু গ্রেফতার করে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো যাবে না। ফাঁস ঠেকাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মূল ভূমিকা রাখতে হবে। এ ছাড়া অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন ফাঁস রোধে এগিয়ে আসতে হবে। প্রশ্ন ফাঁসের আলামত পেলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ নাগরিক যেন সে তথ্য পুলিশকে দেন, তেমন মূল্যবোধের পরিচয় দিতে হবে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত গ্রুপগুলোর 'অ্যাডমিন' শনাক্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে 'মিসাইল ও আইসিটি' গ্রুপ থেকে প্রশ্ন পেয়ে তা ফাঁস করেছেন- এমন একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ওই দুই গ্রুপের নেপথ্যে কারা রয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের অভিযানে গ্রেফতার হাসানুর রহমান প্রায় চার বছর ধরে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। প্রশ্নপত্র বিক্রি করে টাকা আয় ক্যামব্রিজের গ্রেফতার শিক্ষকদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। অসৎ উপায়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভালো ফল অর্জন করানোই ছিল তাদের প্রধান টার্গেট। যাতে প্রতিষ্ঠানের সুনাম হয়। উত্তরখানের ক্যামব্রিজ হাইস্কুলটি এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। তারা মূলত অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করান।

গোয়েন্দারা মনে করছেন, রাজধানীসহ সারাদেশে এ ধরনের আরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানকার শিক্ষকরাই মূলত ফাঁস করা প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। এ ছাড়া আরও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত বলেও তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মঙ্গলবার সমকালকে জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে অনুসন্ধান শুরু করেছেন। তিনি মনে করেন, এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যেভাবে প্রশ্ন ফাঁস করা হয়েছে তা সমুদ্রের সঙ্গে তুলনীয়। সমুদ্রে হাতড়ে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা কষ্টসাধ্য। নিরবচ্ছিন্নভাবে কষ্টসাধ্য এ কাজ শেষ করে প্রশ্ন ফাঁসের শেকড়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। আপাতত তারা কোনো চুনোপুঁটি ধরতে চান না।

পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করা প্রশ্ন ছড়ানো হয়েছে এমন ১২টি সুনির্দিষ্ট গ্রুপ সম্পর্কে তারা বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। এর বাইরে আরও কিছু ভুয়া গ্রুপও রয়েছে; যারা প্রশ্ন দেওয়ার কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মো. শহীদুল্লাহ সমকালকে বলেন, শুধু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আটক করতে চাই না। কারণ, তাদের সামনে প্রশ্ন থাকলে ভালো ফলাফলের জন্য তারা সেই পেজে ঢুকতেই পারে। তবে যারা তাদের প্রলুব্ধ করছে তারাই মূল অপরাধী। শনাক্ত করে সেই রাঘববোয়ালদের ধরার চেষ্টা চলছে। আশা করি, শিগগির তারা ধরা পড়বে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আগামী শনিবার শেষ হবে এবারের এসএসসি পরীক্ষা। আজ এবং শনিবার তিন বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ওই তিন বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো না গেলেও গোয়েন্দাদের মূল লক্ষ্য আসল অপরাধীদের ধরা। সেটা করতে না পারলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা ও একাগ্রতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠবে।

আওয়ামী লীগের নীলনকশা ভেস্তে দিয়েছে বিএনপি

লোটন একরাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ায় জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে তার। তাকে সাজা দিয়ে বিএনপিকে নেতৃত্বহীন, দুর্বল, এমনকি দল ভাঙার ষড়যন্ত্রও কাজে আসবে না। শত অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন এবং থাকবেন। পাশাপাশি বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে নির্বাচন করতে সরকারের নীলনকশাকে জনগণ সফল করতে দেবে না। সরকারের ফাঁদে পা দেননি তারা। সরকার হতাশ। পরিস্থিতি বুমেরাং হয়েছে।
সাবেক মন্ত্রী আরও বলেন, মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এই শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে তার ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণ সুস্পষ্টভাবে জেনে গেছে, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে 'ভুয়া কাগজ' তৈরি করে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে তাকে। সাবেক মন্ত্রী বলেন, এই মামলার সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে পারেনি সরকার। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করা হয়েছে। অথচ ট্রাস্টের অ্যাকাউন্ট থেকে এক টাকাও উত্তোলন করা হয়নি। বরং ওই অ্যাকাউন্টের টাকা সুদে-আসলে এখন ৬ কোটি টাকা হয়ে জমা পড়ে আছে। তাহলে কীভাবে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করলেন খালেদা জিয়া?
একই সঙ্গে ড. মোশাররফ বলেন, মামলার বিচার চলাকালে খালেদা জিয়া এতিমদের টাকা খেয়েছেন বলে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী- এতে আদালত প্রভাবিত হয়েছে। রায়ের আগেই আওয়ামী লীগের নেতারাও প্রকাশ্যে গণমাধ্যমকে বলেছেন, খালেদা জিয়ার সাজা হবে। এসব ঘটনা থেকে জনগণের বিশ্বাস- এ মামলায় শাস্তি দেওয়ার মতো কোনো তথ্য-উপাত্ত-প্রমাণ ছিল না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশটি দিলেও শাস্তি দেওয়া হলো প্যানাল কোর্টের ধারায়। ঘন ঘন খালেদা জিয়ার হাজিরা দেওয়াসহ মামলার তাড়াহুড়ায় জনমনে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এ রায়টি হয়েছে। একই সঙ্গে রায়ের সার্টিফায়েড কপি ও কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার ব্যাপারেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সাবেক মন্ত্রী বলেন, অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়ায় বেগম জিয়া 'দেশনেত্রী' থেকে এখন 'দেশ মাতা' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। জাতীয় নেতা থেকে 'আন্তর্জাতিক নেতায়' পরিণত হয়েছেন। এভাবে শাস্তি দেওয়ার পর জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর বড় বড় দেশের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই সাজা বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেন জনগণ। কিন্তু সরকারের এহেন স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আচরণ ও সারাদেশে গ্রেফতার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানোর ঘটনায় জনগণ বিক্ষুব্ধ ও বিরক্ত।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের নাটকে বিচার বিভাগ আজ প্রশ্নের সম্মুখীন বলে অভিযোগ করেন ড. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে প্রেরণ ও সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের গ্রেফতার ও নির্যাতনে জনগণ এ সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে।
তিনি বলেন, জনগণ খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে এক ও অভিন্ন মনে করে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে তাকে কারামুক্ত করে তার নেতৃত্বে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ জনগণ।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আর একটি নির্বাচন এ দেশের জনগণ চায় না বলে দাবি করেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এ নেতা। সরকার যদি আবার সেই পথে অগ্রসর হয়, দেশে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে, জনগণ তা উত্তরণের পথ বেছে নেবে বলে তার দৃঢ়বিশ্বাস।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির কর্মসূচি এবং করণীয় সম্পর্কে নানা কথা বলছেন, যা অনভিপ্রেত ও এখতিয়ারবহির্ভূত। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও আমাদের নেতৃত্ব ও দলের গঠনতন্ত্র নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, একটি দলের গঠনতন্ত্রে কী থাকবে ও নেতৃত্ব কে দেবেন- তা নিয়ে আরেকটি দলের নেতার কোনোরকম বক্তব্য রাখার অধিকার নেই। বিএনপি কীভাবে চলবে, কী কর্মসূচি নেবে- তা নির্ধারণের যোগ্যতা ও দূরদর্শিতা তাদের আছে। বিএনপি অন্য দলের পরামর্শ বা উস্কানিতে বিভ্রান্ত হবে না। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে দল ১৫৪ আসনে জনগণের ভোট ছাড়া বিনা নির্বাচনে 'অনৈতিক' সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেন, সেই অগণতান্ত্রিক, অবৈধ রাষ্ট্র পরিচালনাকারী দলের মুখে অন্য দলের গণতন্ত্র চর্চা ও গঠনতন্ত্র নিয়ে কথা বলা শোভা পায় না।

প্রশাসনে এখনও সুদিন বিএনপিপন্থিদের

শরীফুল ইসলাম: বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও পেয়েছেন সময়মতো পদোন্নতি ও ভালো পদায়ন। ওই আমলে জনপ্রশাসন (সংস্থাপন) সচিবের একান্ত সচিব ছিলেন। ছাত্রজীবনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। বর্তমান সরকারের আমলে হয়েছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব। আর সচিব হওয়ার পেছনে বড় যোগ্যতা- তার ভাই সরকারের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন।
শুধু তিনি নন, প্রশাসনে এমন প্রায় ২০ জন সচিব রয়েছেন, যারা বিএনপি আমলে খুব প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমান সরকারের আমলেও কমেনি তাদের প্রভাব। উল্টো প্রশাসনের শীর্ষ পদে বসেছেন তারা। অথচ ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, চাকরিতে এসে আওয়ামী সমর্থক কর্মকর্তা হিসেবে বিএনপি আমলে বারবার পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে যার যার অবস্থান থেকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির জন্য কাজ করেছেন এমন অনেক কর্মকর্তা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তালিকায় প্রথমদিকে থেকেও তারা সচিব হতে পারছেন না। আবার যারা সচিব হয়েছেন তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে। প্রশ্ন উঠেছে- ইতিমধ্যে ভালো অবস্থানে থাকা বিএনপি সমর্থিত কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচনে ভূমিকা কী হবে? তারা বাতাস বুঝে আবার ভোল পাল্টাবেন বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্নিষ্টরা। তাদের মতে, পরিস্থিতি বিপাকে গেলে পরীক্ষিত কর্মকর্তারা আর সরকারের পাশে থাকবেন না। তারা নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য নীরব থাকবেন। অন্যদিকে সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।

প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রশাসন সাজানোর অজুহাতে সুবিধাভোগী ও অযোগ্য কর্মকর্তাদের দপ্তর, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হচ্ছে। অথচ যোগ্য কর্মকর্তা যথাস্থানে পদায়ন না হওয়ায় জনপ্রশাসন তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যাদের জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার তালিকা করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই ছাত্রদল ও শিবির অনুগত কর্মকর্তা। কাদের ইশারায় এই তালিকা করা হয়েছে- সরকারের নীতিনির্ধারকরাও জানেন না বলে জানা গেছে।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে জনপ্রশাসন পরিচালনার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। মূল লক্ষ্য ছিল- প্রশাসনকে গতিশীল করা; যোগ্য, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের যথাস্থানে পদায়ন ও ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। ব্যক্তি সখ্যকে প্রাধান্য দিয়ে অযোগ্যদের পদোন্নতি ও ভালো জায়গায় পদায়ন করা হচ্ছে। দ্বিতীয় মেয়াদের শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের চার বছরে জনপ্রশাসনে সচিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েক দফা পদোন্নতি ও পদায়ন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পক্ষের কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে চিহ্নিত সুবিধাভোগীদের অবস্থান সুসংহত করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, প্রশাসনের কাজের গতি পর্যবেক্ষণে কোনো তদারকি সেল নেই। যে কারণে সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের ইশারায় সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। পরোক্ষভাবে জামায়াত-বিএনপি ঘরানার কর্মকর্তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সচিব পদ শূন্য হলে শুধু শূন্যস্থান পূরণ করার কাজ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একজন অতিরিক্ত সচিবকে দেওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ওই সচিবের দায়িত্বে। অথচ দীর্ঘদিন সচিব হিসেবে কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভালোভাবে কাজ করলেও তাদের অবস্থানের পরিবর্তন হচ্ছে না। তারা আগের জায়গায় থাকলেও তাদের জুনিয়র কর্মকর্তাদের দেওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আবার অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে যাদের ওই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তারা ওই পদের যোগ্য কি-না, তারও কোনো হিসাব-নিকাশ নেই। কতিপয় সিনিয়র কর্মকর্তার সঙ্গে যাদের সুসম্পর্ক তাদেরই দেওয়া হচ্ছে ওই পদের দায়িত্ব। সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেয়াদের মহাজোট সরকারের কতিপয় কর্মকর্তার একচ্ছত্র ক্ষমতার কারণেই কর্মকর্তাদের পদায়ন ও পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় বিভাজন তৈরি হয়েছে। তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের চুক্তি, পদোন্নতি ও পদায়ন হয়ে আসছে। তারাই প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে নিজেদের পছন্দনীয় কর্মকর্তাদের এসব জায়গায় পদায়ন দিয়ে আসছেন। এক্ষেত্রে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ডিও আমলে আনা হচ্ছে না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ঢিমেতালে চলছে। ফলে বর্তমানে বড় বড় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পারফরম্যান্স নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নৌপরিবহনমন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল (অব.) আকবরের একান্ত সচিব হারুনুর রশিদ এখন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক। বর্তমান সরকারে আমলে পদোন্নতি পেয়েছেন দুই দফা। এখন তিনি সচিব হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। বিএনপির যোগাযোগমন্ত্রী কর্নেল (অব.) অলি আহমদের একান্ত সচিব দেওয়ান হুমায়ন কবির এখন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক।
সম্প্রতি ৮৫ ব্যাচের এমন ৫ কর্মকর্তাকে সচিব পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যারা বিএনপি আমলে পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব; পেয়েছেন সময়মতো পদোন্নতিও। উল্টো ওই ব্যাচের পরীক্ষিত মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত কাউকেই এখনও সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। শুধু ওই ব্যাচই নয়; ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে যেসব কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সেলকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন, ওই কর্মকর্তাদের ভাগ্যেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। ওইসব কর্মকর্তার কেউ কেউ সচিব হলেও কাজ করছেন কম গুরুত্বপূর্ণ পদে।

সূত্র জানায়, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ জেলার ডিসি ও একটি বিভাগের কমিশনার ছিলেন এমন কর্মকর্তা রয়েছেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে। এ ছাড়া ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব এখন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন। চারদলীয় জোটের আমলে কুড়িগ্রামে ডিসি ছিলেন; যার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হয়রানি করার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে তিনি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ৮৪ ব্যাচের একজন মহিলা কর্মকর্তার পুরো পরিবারের রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও তিনি এ সরকারের আমলে সচিব হয়েছেন। অথচ ওই ব্যাচের একাধিক কর্মকর্তা চারদলীয় জোটের আমলে পরপর চারবার পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন; তাদের রাখা হয়েছে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে।

প্রশাসনে একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, বিগত ৮ বছরে প্রশাসনে পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে দল সমর্থক বা বিরোধী দলের সমর্থক বলে কিছুই নেই। প্রশাসনে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তাদের আশীর্বাদ যাদের জুটছে, তারাই পদোন্নতি ও ভালো পদায়ন পাচ্ছেন। তবে প্রশাসন-সংশ্নিষ্টরা প্রশাসনে নতুন এ মেরুকরণকে ভালো চোখে দেখছেন না। তারা মনে করেন, এটি প্রশাসনের জন্য অশনি সংকেত। তারা বলেন, বিগত ২০ বছরে দলীয়করণ করে যেভাবে প্রশাসনের মাজা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এখন নতুন এ নিয়মের মাধ্যমে প্রশাসনিক কাঠামো ভাঙার শেষ পেরেকটুকু মারা হয়েছে।
প্রশাসনের এ দৈন্যদশা মেধাবী কর্মকর্তাদের মাঝে হতাশার জন্ম দিয়েছে। তাদের অনকেই চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ারও পরিকল্পনা করছেন। তবে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান সমকালকে বলেন, প্রশাসনে কিছু ভূত ঢুকেছে। এগুলো দূর করারও চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো কর্মকর্তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় কাউকে পদোন্নতি ও পদায়ন করা হচ্ছে না। পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে সামষ্টিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন রিপোর্টও বিবেচনা করা হয় বলে জানান তিনি।
তবে এসব কথা একেবারই মানতে নারাজ প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যাচের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, জনপ্রশাসন গুটিকয়েক কর্মকর্তার হাতে বন্দি হয়ে পড়েছে। তারা যেভাবে চাচ্ছেন প্রশাসন সেভাবেই চলেছে। এসব কর্মকর্তা বিগত সময়ের সুবিধাভোগীদের সুবিধা দিয়ে নিচের ব্যাচের কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছেন। প্রশাসনিক কাঠামোতেও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

ইমরান খানের অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে রেহাম'র চাঞ্চ্যলকর তথ্য

‘আমি যত দূর জানি, এই বুশরার সঙ্গে ইমরানের সম্পর্ক তিন বছর ধরে। এমনকি আমাদের সংক্ষিপ্ত দাম্পত্য জীবনেও ইমরান প্রায়ই বুশরার সঙ্গে দেখা করত। সে আগাগোড়া একজন মিথ্যাবাদী।’দ্য টাইমসকে বলেছেন, দ্বিতীয় স্ত্রী রেহাম খান।ইমরান খানের বিপক্ষে ‘অনৈতিক সম্পর্কের’ অভিযোগ তুললেন দ্বিতীয় স্ত্রী রেহাম খান জানালেন, তাঁর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকার সময়ই ‘তৃতীয় স্ত্রী’ বুশরা মানেকার সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। রেহামের ধারণা, তৃতীয় বিয়ের পর ইমরান যেসব কথা বলছেন, সেগুলোর একটিও সত্যি নয়। তিনি ইমরানকে ‘মিথ্যাবাদী’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, বুশরার সঙ্গে কমপক্ষে তিন বছর ধরে পরিচয় ইমরানের।
সামাজিক মাধ্যমেও রেহাম একই কথা জানিয়েছেন। বিয়ের সময় নিয়েও সন্দেহ আছে তাঁর মধ্যে, ‘আমি যত দূর জানি, ইমরান বুশরাকে গত ১ জানুয়ারি বিয়ে করেছে। কিন্তু সে এটা জনসম্মুখে প্রকাশ করল এখন। একই ব্যাপার সে করেছিল আমাকে বিয়ে করার পর।’
রেহামের এই সাক্ষাৎকার রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে ইমরানকে। ক্রিকেট ছাড়ার পর পুরোদস্তুর রাজনীতিক হয়ে ওঠা ইমরান এখন স্বপ্ন দেখেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় আরোহণের। তাঁর দল তেহরিক-ই-ইনসাফ রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট শক্তি অর্জন করেছে। কেবল তা-ই নয়, এই মুহূর্তে ক্ষমতাসীন মুসলিম লিগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী তারাই। আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের আগে রেহামের এসব কথাবার্তা মুসলিম লিগের হাতে যথেষ্ট রসদ সরবরাহ করবে—এটা বলাই যায়। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে অবসরে যান ইমরান। এর পরপরই রাজনীতিতে তাঁর আবির্ভাব। ১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ ধনকুবের জেমস গোল্ডস্মিথের মেয়ে জেমাইমাকে বিয়ে করেন ইমরান। সেই বিয়ে স্থায়ী হয় ২০০৪ পর্যন্ত। জেমাইমার ঘরে আছে ইমরানের দুই ছেলে। সাংবাদিক ও টেলিভিশন উপস্থাপিকা রেহামের সঙ্গে তাঁর বিয়ে এক বছরও টেকেনি।



‌অ্যাপোলেতেই নিচ্ছে প্রায় সাড়ে তিনশ নার্স

খালি পদের সংখ্যা : ৩২০ জন
চাকরির ধরন : ফুল টাইম
শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা/বিএসসি ইন নার্সিং।
অভিজ্ঞতা : ৩ থেকে ৫ বছর
কর্মস্থল : বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে

অন্যান্য সুবিধা : মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় বেতনসহ প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, উৎসব ভাতা, হোস্টেল, ডাইনিং ও চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে।

আবেদনের নিয়মাবলী :
আগ্রহী প্রার্থীদেরকে ৫ মার্চ ২০১৮ এর মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে recruit@apollodhaka.com অথবা সরাসরি পদের নাম উল্লেখ করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি, সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, বৈধ নার্সিং রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত নিম্নের ঠিকানায় প্রেরণ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট, অ্যাপোলো হসপিটালস, প্লট: ৮১, ব্লক-ই, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা- ১২২৯
আবেদনের শেষ তারিখ : ৫ মার্চ ২০১৮

কোম্পানির তথ্য : অ্যাপোলো হসপিটালস ঢাকা
ঠিকানা : প্লট # ৮১, ব্লক # ই, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা- ১২২৯

ওয়েব : www.apollodhaka.com

বিজ্ঞপ্তিটি সরাসরি পেতে এই লিংকে ক্লিক করুন : http://apollo.bdjobs.com/JobDetailNew.asp?JobId=329 or http://apollo.bdjobs.com

উপসচিব হলেন যে ৩৯১ কর্মকর্তা

বিভিন্ন ক্যাডারের মোট ৩৯১ জন কর্মকর্তাকে সরকারের উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নতুন পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৪তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাই বেশি। তবে অন্যান্য ক্যাডার থেকে যাঁরা পদোন্নতি পেয়েছেন, তাঁরা ২৪তমের আগের বিসিএসের কর্মকর্তা।
নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে উপসচিব করা হয়। অন্য ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা এ পদে পদোন্নতি পান। এর আগে গত ডিসেম্বরে যুগ্ম সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। সেই সময় উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় আসে। তবে বিভিন্ন কারণে এ পদে পদোন্নতি দিতে দেরি হয়ে যায়। রেওয়াজ অনুযায়ী যেসব কর্মকর্তা উপসচিব হলেন, তাঁদের জনপ্রশাসনে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এরপর তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় পদায়ন করা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানায়, নতুন উপসচিব হওয়া বেশির ভাগ কর্মকর্তাকেই এখন যে জায়গায়, সেখানেই রাখা হবে।























কী মধু আছে ক্রিকেট বোর্ডে

ছবিটি এআই দিয়ে বানানো শিরোনামে করা প্রশ্নটি গত কয়েক দিনে অনেকেই আমাকে করেছেন। উত্তর তো দিতেই পারিনি, উল্টো সম্পূরক আরও অনেক প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি...