‘রাতভর বিক্ষোভ হবে’! যা যা হল এসএসসি ভবনে এবং ভবনের সামনে
চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের ১৪ জন প্রতিনিধি গিয়েছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে কথা বলতে। তাঁরা রাত ৯টা নাগাদ এসএসসি ভবনের বাইরে বেরিয়ে এসে জানান, নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগে প্রথমে আটটি কাউন্সেলিং হয়েছিল। পরে আদালতের নির্দেশে আরও পাঁচটি কাউন্সেলিং হয়। একই ভাবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে মোট সাতটি কাউন্সেলিং হয়েছিল। এর মধ্যে নবম-দশমের তিনটি কাউন্সেলিং হয়েছিল এক বছরের মধ্যে। একাদশ-দ্বাদশের ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং হয়েছিল এক বছরের ক্ষেত্রে দু’টি। আইনি জটিলতা এবং আদালতের বেশ কিছু মামলা হওয়ায় আর কাউন্সেলিং বা নিয়োগ হয়নি। অন্য দিকে, প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে যে সমস্ত কাউন্সেলিং হয়েছিল, তার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছ এসএসসি। চাকরি হারাদের। অর্ঘ্য পাল নামে এক চাকরিহারা জানান, স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, গেজ়েট রুলস্ প্যানেল ভ্যালিটেশন যে হেতু এক বছর, তার মধ্যে যত জন যোগ্য শিক্ষক চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করে ‘সার্টিফাইড’ করা হবে। কিন্তু ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যাঁরা যোগ্য, তাঁদের যদি তালিকা প্রকাশ করে সিলমোহন না দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন, তা হলে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের ১২ শতাংশ হারে বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে। তাঁরা অযোগ্য হিসাবেই চিহ্নিত হবেন। তাই তাঁরা চান, যোগ্যদের তালিকা দেওয়া হোক। এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘এসএসসি আজ (সোমবার) তালিকা প্রকাশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটি বিভাজনমূলক তালিকা। উনি (এসএসসি-র চেয়ারম্যান) আরও দু’দিন আইনি পরামর্শ নেওয়ার জন্য সময় নিয়েছেন।’’ কিন্তু এ নিয়ে ক্ষুব্ধ চাকরিহারা শিক্ষকেরা জানিয়ে দেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে রাতভর বিক্ষোভ করবেন তাঁরা।
অশিক্ষক কর্মীদের বিক্ষোভ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে
এসএসসি ভবনে যখন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা আলোচনায় যান, তখন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র চাকরিহারা কর্মীরা গিয়েছিলেন নিবেদিতা ভবনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরাও আশাহত। এখন পর্ষদের অফিসে অনশনে বসেছেন তাঁরাও। গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখান বাকি চাকরিহারারা।
তালিকা প্রকাশ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি এসএসসি!
কৃষ্ণকান্ত রায়, চিণ্ময় মণ্ডলেরা এসএসি ভবন থেকে বেরিয়ে জানান, তালিকা প্রকাশ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি এসএসসি। কৃষ্ণকান্ত বলেন, ‘‘আমরা আশাহত। যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা আলাদা করে প্রকাশ করা হবে বলে জানতাম। কিন্তু পুরোটাই গুলিয়ে দেওয়া হল। চতুর্থ তালিকা থেকে সবাইকে অযোগ্য করে দেওয়া হচ্ছে। ওঁরা আর তালিকা দেওয়ার কথা বলেননি। যত ক্ষণ না তালিকা দেওয়ার কথা বলা হবে, আমরা এখানে অবস্থানে থাকব। বেতন চাই না। আগে যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা দেওয়া হোক।’’
‘আপনাকে ঘেরাও করা হচ্ছে’, এসএসি ভবন থেকে বেরিয়ে আসার আগে চেয়ারম্যানকে চাকরিহারা শিক্ষক
চাকরিহারা শিক্ষক কৃষ্ণকান্ত রায়-সহ ১৪ জন গিয়েছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করতে। তিনি প্রায় ৫ ঘণ্টা পর যখন বেরোলেন চোখেমুখে বিরক্তির ছাপ। তিনি বলেন, ‘‘টাকা খেল নেতারা। আর লোকে আমাকে বলবে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে। আমাদের বলা হবে, টাকা দিয়ে চাকরি করছে। মামার বাড়ির আবদার! আমার চাকরি, সম্মান গিয়েছে তোমাদের দোষে। তোমরা কী ভাবে আমার চাকরি রাখবে, সেটা নিজেরা ঠিক করো।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘চেয়ারম্যানকে বলে এসেছি, আপনাকে ঘেরাও করা হচ্ছে।’’
পাঁচ ঘণ্টা পর এসএসসি ভবন থেকে বেরোলেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের প্রতিনিধিরা
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর এসএসসি ভবন থেকে বেরোলেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের ১৪ প্রতিনিধি। কৃষ্ণকান্ত রায়, চিন্ময় মণ্ডলেরা এসএসসি ভবন থেকে বেরিয়ে এসে জানান, যোগ্যদের তালিকা থেকে বার করে দেওয়ার ছক চলছে। তাই এসএসসি চেয়াম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে ঘেরাও করে রাখা হবে। তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থানে অটল থাকবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন