
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে ‘গাজায় নারী শিশুসহ নৃশংস হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, গাজার যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে নারী ও শিশু। জাতিসংঘ কেন এই যুদ্ধ বন্ধ করতে সফল হচ্ছে না? জাতিসংঘে যারা অর্থ সহায়তা দেয়, তারাই যুদ্ধ বাঁধিয়ে রেখেছে। গাজার যুদ্ধ শত বছরের সমস্যা। এই সমস্যাটা টিকিয়ে রেখে সাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে। পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ টিকিয়ে রাখছে। যারা মানবতার পক্ষে তাদের প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা যুদ্ধকে না বলার জন্য শক্ত জনমত গড়ে তুলুন। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, অ্যাকশন এইডের মৌসুমী বিশ্বাস, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নেটওয়ার্কিংয়ের পরিচালক জনা গোস্বামী, গণশক্তির নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গাজা ও রাফায় ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর সামরিক অভিযান, অবরোধ ও গণহত্যা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। শিশু, গর্ভবতী নারী, বৃদ্ধ ও সাধারণ মানুষদের নির্বিচারে হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সকল ধরনের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিতে হবে। বাংলাদেশি পাসপোর্টে একসেপ্ট ইসরায়েল (ইসরায়েল ব্যতীত) পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ, ওআইসি ও অন্যান্য ফোরামে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। গাজা ও রাফায় মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহায়তায় অংশগ্রহণের বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া আরব বিশ্বের স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়- এই অবস্থান বাংলাদেশকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে বিশ্ব জনমত গঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার কূটনৈতিক প্রয়াস নিতে হবে। ইসরায়েলি বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ মুহূর্তে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো শুধু একটি রাষ্ট্রের প্রতি সহানুভূতি নয়, বরং বৈশ্বিক মানবতা রক্ষার সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন