রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫

আলোচনায় বসতে বিএনপিকে জামায়াতের আহ্বান

 আলোচনায় বসতে বিএনপিকে জামায়াতের আহ্বান

মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

 প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫ | ২১:২৬

জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনে খোলামেলা আলোচনায় বসতে বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।  দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় যেতে চায় না জামায়াত। বরং দেশের স্বার্থে আলোচনায় বসতে চায়।’

আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানিয়ে ডা. তাহের বলেন, রাজনীতির অনেক খেলা আছে, জামায়াত খেলতে চায় না। সোমবার দলীয় বৈঠক রয়েছে—সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে।

বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিনা—প্রশ্নে ডা. তাহের বলেন, এ আহ্বান এখন সংবাদমাধ্যমে মাধ্যমে দিচ্ছি। দেখি বিএনপি কাল (সোমবার) সংবাদ মাধ্যমে কী প্রতিক্রিয়া দেখায়।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হোক তা অবশ্যই চাই। কিন্তু নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট চাই। গণভোটে সবদল একমত। তবে একটি দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায়। যা সম্পূর্ণ অবাস্তব।’ 

সাত মাসের সংলাপের পর গত ১৭ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে জুলাই সনদে সই করে রাজনৈতিক দলগুলো। এতে সংস্কারের ৮৪টি প্রস্তাব রয়েছে। ৬১টি প্রস্তাবেই কোনো না কোনো দলের নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। ২২ মৌলিক সংস্কারের ৯টিসহ ১৫ প্রস্তাবে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। দলটি জানিয়েছে, ক্ষমতায় গেলে এগুলো বাস্তবায়ন করবে না। 

বিএনপির দাবিতে সনদে নোট অব ডিসেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বলা হয়, যে দল যে বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, ক্ষমতায় গেলে সেই অনুযায়ী সংস্কারের এখতিয়ার রাখবে। তবে ২৮ অক্টোবর ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে যে সুপারিশ করেছে, তাতে যুক্ত সনদে নোট অব ডিসেন্ট থাকলেও, নেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশের খসড়ায়। দ্বিতীয় খসড়ার তপশিলে ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাব যুক্ত করা হয়েছে। যেগুলো বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, গণভোট হবে আদেশ এবং এই তপশিলের ওপর। থাকবে না নোট অব ডিসেন্ট। বিএনপি একে প্রতারণা আখ্যা দিয়েছে। দলটি নির্বাচনের দিনে গণভোট চায়। জামায়াত নোট ডিসেন্ট মুক্ত তপশিলের ওপর নভেম্বরে গণভোট চায়। সোমবার উপদেষ্টার পরিষদে বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। দুই দলের বিরোধের কারণে সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে এ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। 

এর আগের সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে ডা. তাহের বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আসুন দেশের এ পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। বিএনপিকে আহ্বান করব একসঙ্গে বসার। আলোচনা করব কীভাবে সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ তৈরি হবে।’ তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনার টেবিলে সমস্যার সুষ্ঠু রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে বিএনপির প্রতি জানাচ্ছি। জনগণ সকল সংকটের সমাধান ও ঐক্য চায়।’

বিএনপির সমালোচনা করে তাহের বলেছেন, ‘দলটি নেতারা জামায়াতকে নিষিদ্ধের কথা বলছে। তাদের কাছে জানাতে চাই, ১৯৯১ সালে যদি জামায়াত নিষিদ্ধ থাকতো তাহলে কী বিএনপি সরকার গঠন করতে পারতো? সেদিন যদি জামায়াত সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় না বসাতো, তাহলে বিএনপি কী বর্তমান পর্যায় আসতে পারতো? জবাব হল: অবশ্যই না। বিএনপি পতিত স্বৈরাচারীদের ভাষায় বক্তব্য দিয়ে অকৃতজ্ঞতার প্রমাণ দিচ্ছে। ফ্যাসিবাদীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বর্তমান সংকট বিএনপিই সৃষ্টি। জামায়াত কখনো ধোঁকা, প্রতারণা ও মুনাফিকির রাজনীতি করে না। বিএনপিই বরং ধোঁকা, প্রতারণা ও অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছে।’ 

বিএনপি প্রথম থেকেই সংস্কারের অনীহা প্রকাশ করেছে দাবি করে ডা. তাহের বলছেন, ‘দুনিয়ার কোনো দেশেই নোট অব ডিসেন্টের উপর গণভোট হয়নি। বিএনপির মহাসচিব জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এখন মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে গিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে। অথচ অভিযোগ করছে যে, জামায়াত তাদের বিপদে ফেলেছে। বিএনপির এক নেতা বলেছেন, তারা সংস্কার চান না, জুলাই সনদ এবং গণভোট চান না। জামায়াত কখন কোথায় বলেছে, সংস্কার চায় না।’ 

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত ৩০০ আসনে

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান ...