বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে দেশে যে সংকট তৈরি করেছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ঐকমত্য কমিশন, আমি বিশ্বাস করি এই সংকট কেটে যাবে। যা হবার হয়ে গেছে; আপনারা দয়া করে ওই সমস্যাগুলো সমাধান করেন, যাতে সবাই একসঙ্গে নির্বাচনের দিকে যেতে পারি। এই সমস্যার সমাধান করে আমরা যেন জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারি, সেই পথে এগিয়ে চলুন।
তিনি বলেন, আমরা অতীতে আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, ভবিষ্যতেও আপনাদের সঙ্গে থাকবো। কিন্তু অবশ্যই আপনারা যে জায়গা তৈরি করেছেন, তা পরিষ্কার করে দেবেন।
শুক্রবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণসংহতি আন্দোলনের ৫ম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ এখানে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে কোনোদিন হতাশাবাদী ছিলাম না, রাজনৈতিক জীবনেও হতাশাবাদী নই। কারণ আমি বিশ্বাস করি যে, ন্যায়ের জয় হবেই, সত্যের জয় হবেই। এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব সবার প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান। জোনায়েদ সাকির নেতৃত্ব গণসংহতি আন্দোলনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রমুখ।
সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা যখন নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয় তখন দুঃখ করার কী থাকে। যাদের আমরা মাথায় তুলে রেখেছি, তাদের এখন প্রতারক আখ্যা দিতে হচ্ছে, এর চেয়ে দুঃখ আর লজ্জা আর কী থাকে। তারা জাতীয় ঐক্যের অনৈক্য তৈরি করেছে। তারা বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। তবে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। এখন বাংলাদেশ আবার সংকট মুহূর্তে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। জুলাই আন্দোলনের মতো সবাইকে আবার একত্রে থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী বলেন, মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে যে নির্বাচনের পথরেখা সেটা সফল করতে হবে। মনে রাখতে হবে বিচার, সংস্কার, নির্বাচন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জাতীয় দাবি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন পেছাতে পারে এই বক্তব্যের সমালোচনা করে সাকী বলেন, এমন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করবেন না, যাতে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়। মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতেই হবে। জনগণের ভোটের অধিকার বাস্তবায়ন করা এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব। এটি এই সরকারকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর আগে গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় সম্মেলনের শুরুতে পায়রা উড়িয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা এবং শহীদ ওমর নুরুল আবছারের স্ত্রী ফারজানা জাহান অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
 
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন